চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে ঐতিহ্যবাহী কানসাট রাজবাড়ি সংরক্ষণ ও সংস্কারের দাবিতে ব্যতিক্রমী কর্মসূচির আয়োজন করেছে উপজেলার সচেতন নাগরিক সমাজ। শুক্রবার (১৬ মে ২০২৫) সকালে শিবগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে এক বিশাল সাইকেল র্যালি বের হয়। র্যালিটি কানসাট রাজবাড়ি ঘুরে পুঁটিমারী বিল প্রদক্ষিণ করে আবার উপজেলা পরিষদে এসে শেষ হয়।র্যালিতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিককর্মী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেন। র্যালি শেষে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তারা কানসাট রাজবাড়িকে অবিলম্বে সংরক্ষণের দাবিতে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আজাহার আলী। তিনি বলেন, কানসাট রাজবাড়ি শুধু একটি ভবন নয়, এটি এই অঞ্চলের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও আত্মপরিচয়ের প্রতীক। এটি পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ করা সময়ের দাবি। ইতিমধ্যে আমরা রাজবাড়ি ঘিরে সম্ভাব্য প্রকল্পের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছি। আশা করি, অচিরেই দৃশ্যমান অগ্রগতি হবে।আরও বক্তব্য দেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) তৌফিক আজিজ, উপজেলা ভেটেনারি সার্জন ডা. আবু ফেরদৌস, সহকারী উন্নয়ন কর্মকর্তা শাহিন আক্তার, মোবারকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদুল হক হায়দারী মাহমুদ মিয়া প্রমুখ।সমাবেশে বক্তারা বলেন, একসময় কানসাট রাজবাড়ি ছিল রাজশাহী অঞ্চলের অন্যতম জমিদারবাড়ি। জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হলেও এর স্থাপত্য ও সংস্কৃতির গুরুত্ব আজও অমলিন। অথচ দীর্ঘদিন অবহেলা ও সংস্কারের অভাবে এই রাজবাড়িটি প্রায় ধ্বংসের পথে।স্থানীয় নাগরিকরা জানান, রাজবাড়িটি ঘিরে একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, মিউজিয়াম ও পর্যটন অবকাঠামো গড়ে তুললে এটি যেমন অতীতকে ধারণ করবে, তেমনি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য হবে ইতিহাসচর্চার কেন্দ্র।কলেজের ছাত্রী তামান্না খাতুন বলেন, আমরা আমাদের পাঠ্যবইয়ে যেসব ঐতিহাসিক স্থাপনার কথা পড়ি, এই রাজবাড়িও তার চেয়ে কম নয়। এটি সংরক্ষণ করা হলে আমরা বাস্তব ইতিহাস জানতে পারব।স্থানীয় স্কুলশিক্ষক আফজাল হোসেন বলেন, এই রাজবাড়ির সঙ্গে আমাদের শৈশব জড়িয়ে আছে। এখন সেখানে গেলে মন খারাপ হয়ে যায়। সংস্কারের উদ্যোগ নিলে এটি একটি চমৎকার দর্শনীয় স্থানে পরিণত হতে পারে।ব্যবসায়ী আবদুল মান্নান বলেন, পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তুললে স্থানীয় অর্থনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে। তরুণদের জন্য নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।সমাবেশে বক্তারা ঐতিহ্য রক্ষায় সচেতন নাগরিক সমাজের এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগকে স্বাগত জানান এবং দ্রুত সরকারি সহায়তায় কানসাট রাজবাড়ির পূর্ণাঙ্গ সংরক্ষণ কার্যক্রম শুরুর আহ্বান জানান।#