By: Admin
Apr 7, 2025

 চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধিঃ:রাজশাহীর খড়খড়ি এলাকায় বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়কে ট্রাকের সঙ্গে দুটি বাসের সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত তিনজনের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। পরিবারগুলোর সদস্যদের আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা। সোমবার বিকেলে সরজমিনে নিহতের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার রানীহাটি ইউনিয়নের ঘোড়াপাখিয়া গ্রামে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। নিহত জামায়াতকর্মী গ্রাম্য চিকিৎসক জিয়াউল হক জুয়েলের বিধবা স্ত্রী ইমা খাতুন কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, জামায়াতের পক্ষ থেকে শিক্ষাসফরের পাশাপাশি প্রয়াত জামায়াত নেতা আল্লামা দেলোওয়ার হোসাইন সাঈদী, আলী মোহাম্মদ মোজাহিদ হোসেন ও মাওলানা আবদুল কাদের মোল্লার কবর জিয়ারত ও দোয়া মাহফিলের উদ্দেশ্যে রোববার এশা নামাজের পর বাড়ি থেকে বের হয়। যাবার সময় আমার স্বামী আমাকে বলেন, বাড়িতে ভালমত থেকো। আমাদের জন্য দোয়া করিও। সবার সাথে ভালভাবে চলিও। তখন জানতাম না যে, এটাই আমার স্বামীর সাথে শেষ দেখা ও কথা। রাত দেড়টার দিকে আমার স্বামীর মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে আমার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ল। একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে দুই সন্তান নিয়ে আমি এখন দিশেহারা। আমার প্রয়াত স্বামীর জন্য সবার কাছে দোয়া প্রার্থী। আমার জন্যও দোয়া করবেন যেন দুই সন্তানকে আল্লাহ’র পথে থেকে মানুষ করতে পারি। একইভাবে নিহত জামায়াতকর্মী কসমেটিকসের দোকানী মিজানুর রহমানের পরিত্যক্ত কন্যাসহ চার সন্তান বলেন, আমাদের পরিবারে একমাত্র মাথার ছাতা পিতাকে হারিয়ে আমরা নির্বাক। তারপরও মহান আল্লাহর রহমতে এই বলে নিজেকে শান্তনা দিচ্ছি যে, একটি ভাল কাজের যাবার সময় মৃত্যবরণ করেছেন। একই ঘটনায় নিহত নাসিমের পরিবারেও একই চিত্র দেখা যায়। তিনজনের বাড়ির উঠানজুড়ে হাজারো নারী-পুরুষের ভিড়। সবার মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এর আগে রোববার রাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে দুটি বাসযোগে জামায়াতের ৯০ জন কর্মী ও সমর্থক প্রয়াত জামায়াত নেতা আল্লামা দেলোওয়ার হোসাইন সাঈদী, আলী মোহাম্মদ মোজাহিদ হোসেন ও মাওলানা আবদুল কাদের মোল্লার কবর জিয়ারত ও দোয়া মাহফিলের উদ্দেশ্যে যাবার পথে রাজশাহী বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে খড়খড়ি বাইপাস সড়কে একটি বালুবাহী ট্রাকের সঙ্গে একটি বাসের সংঘর্ষ হলে বাসটি ছিটকে সড়কের পাশে খাদে উল্টে পড়ে। এ সময় সাদিকুল ইসলামের ছেলে জিয়াউল হক জুয়েল (৩১), বেলায়েত হোসেনের ছেলে নাসিম উদ্দিন (৩৩), জোবদুল হকের ছেলে মিজানুর রহমান (৫৫) ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ ঘটনায় আহত হন অন্তত ৪০ জন। আহতদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। সোমবার বিকেল ৩টায় ঘোড়াপাখিয়া বহরম কেন্দ্রীয় গোরস্তান প্রাঙ্গণে তিনজনের নামাজে জানাযা শেষে সেখানেই তাদের মরদেহ দাফন করা হয়। জানাযায় অংশগ্রহণ করেন রাজশাহী মহানগর জামায়াতের আমির ড. মাওলানা কেরামত আলী, জামায়াত নেতা ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র নজরুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আমির মাওলানা আবুজার গিফারী, সেক্রেটারি অধ্যাপক আবু বকর, সদর উপজেলার সেক্রেটারী আবদুর রহমান ও শিবগঞ্জ পৌর জামায়াতের সেক্রেটারী আবদুর রউফ এবং জেলা-উপজেলার নেতৃবৃন্দসহ মুসল্লিরা।#

 

 

 


Create Account



Log In Your Account