By: Admin
Dec 25, 2024

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধিঃ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ও জেলার বাহির থেকে আগত  শতাধিক মৌ চাষীর দল মাঠে মধু চাষে ব্যস্ত। তবে  উপজেলার চেয়ে বাহিরের মৌচাষের সংখ্যাই বেশী। সংশ্লিষ্ট দপ্তর বলছেন শিবগঞ্জ মৌচাষীদের সংখ্যা খুব হওয়ায় তারা বাহির থেকে আসছে। তবে মৌচাষীদের সংখ্যা বৃদ্ধির চেষ্টা চলছে।মৌ বোর্ড গঠনের জন্য সুপারিশ করা হবে।উপজেলার বিভিন্ন মাঠে প্রায় ২৫-৩০ মৌচাষ খামারে ঘুরে মৌচাষীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে মধূ চাষ একটি লাভ জনক পেশা ।তাছাড়া  মধূ খাওয়া সব মানুষের উচিত, কারণ মধুতে প্রায় এক শো রোগের ঔষধ হিসাবে কাজ করে। মধু খাওয়া সুন্নতও বটে।উপজেলার দূর্লভপুর ইউনিয়নের নামো জগনাথপুর মাঠে নাটোর জেলার গুরুদাসপুর থেকে আগত নাটোর মৌ চাষ সমবায় সমিতির সভাপতি মাসুদ রানা জানান এখানে প্রায়  ১৪০টি বাক্স নিয়ে  ২০দিন আগে এখানে আমরা  ৫/৬জন কাজ শুর করেছি। নয় মণ মধু সংগ্রহ করেছি। আরো প্রায়  ১৮মণ মধু সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা আছে। সংগ্রহিত মধু  পাঁচ শো টাকা কেজি দরে বিক্রী করি। মধুকে আমরা বিভিন্ন পদ্ধতিতে প্রক্রিয়াজাত করে বিক্রী করি। তিনি নাটোরে থেকে  পাঁচটি দল মধু চাষ করছি। প্রতিটি দলে গড়ে ৪ জন করে লোক আছে।একই দলে  থাকা বাংলাদেশ হ্যানি রিসার্চ ইন্সিটিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক আরিফ উদ্দিন জানান, সারা বাংলাদেশে বিসিক থেকে সামান্য প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। কৃষি বিভাগ থেকে নাম মাত্র তেল বীজ প্রকল্পের আওয়াতা থেকে সামান্য কিছু সহযোগিতা করা হয়। তিনি আরে বলেন, দেশে  মধুর চাহিদা হলো ২৫ হাজার মেট্রিক টন।  উৎপাদন হয় মাত্র ১৬হাজার মেট্রিক টন। অথচ বাংলাদেশে প্রতিবছর  ৫০/৬০হাজার মেট্রিক টন মধু উতপাদনের সম্ভবনা রয়েছে। কারণ এ দেশে সরিষার  ফুল, আমের মুকুল,লিচুর মুকুল, কালজিরার ফুল,সহ বিভিন্ন ধরণের ফল থেকে  প্রচুর মধু উত পাদন হয়। তিনি বলেন মৌমাছি দুই জাতির মৌমাছি আছে।ইউরোপিয়ন থেকে আমদানী কৃত মৌমাছির জাত হলো এপিস  মেলিফেরা, এরা অত্যন্ত শান্ত,আক্রমণ করে না। মধু উতপদন ক্ষমতা বেশী। আর দেশী জাত হলো এপিস ডরসেটা।এ জাতের মৌমাছির মধু উতপাদনের ক্ষমতা কম। তবে  এরা আক্রমণাত্মক। যদি বাংলাদেশ সরকার মৌ বোর্ড গঠনের মাধ্যমে একটি নীতিমালা তৈরী করে।  উপযুক্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা,নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে।ফলে মধু উতপাদন বেশী হবে। কর্মস্থান বাড়বে।সরকারে রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে। এমনি বিদেশে মধু রপ্তানী করেও যাবে। বিনোদপুর ইউনিয়নের বিশ^নাথপুর সাতভাইয়া মাঠে নড়াইল জেলা  থেকে আগত সেনাবাহিনীর সাবেক সার্জেন্ট মৌচাষী নজরুল ইসলাম জানান আমরা তিনজন একসংগে আছি। কয়েকদিন আগে  কাজ শুরু করেছি। আশা করি ভাল ফলাফল পাবো। তিনি বলেন কয়েক বছর আগে জনৈক ব্যক্তির নিকট হতে মধু চাষেয় গল্প শুনে আগ্রহ হলে ১০ লাখের মৌমাছির  প্রতিটি বাক্স নয় শ টাকা দরে  ১০টি চাক অন্য মধু চাষীর নিকট হতে ক্রয় করে মধু চাষ শুরু করি। প্রথমে প্রায়  পাঁচ লাখ টাকা পুঁজি নিয়ে মধু চাষ শুরু করেছি। এখানে আমাদের ৮৫টি বাক্স আছে। এখানে বাক্স প্রতি ৪০ কেজি করে মধু সংগ্রহের লক্ষ্য মাত্রা রয়েছে।আশা করি সফল হবো ইনশাল্লাহ। তিনি আরো বলেন এখন আর তেমন কোন খরচ নেই। উপকরণাদি  বহন ও যাতায়াত খরচ বাবদ ৩০ থেকে ৫০  হাজার টাকা খরচ হয়। প্রতিবছর জন প্রতি আয় হয় খরচ বাদে আড়াই লাখ টাকা। তিনি আরো বলেন আমরা নড়াইল থেকে প্রায় ২০টি দল এসেছি। প্রতিটি দলেই  তিন থেকে  পাঁচজন লোক আছে। মনাকষা ইউনিয়নের সিংনগর মাঠে নাটোর থেকে আগত  মধূ চাষী সেলিম জানান এখানে আমরা তিনজনে  ১৫দিন থেকে মধূ সংগ্রহ করছি।গত ১৫দিনে  আট মণ মধু সংগ্রহ করেছি। লক্ষ্রমাত্রা রয়েছে  এক শো মণ মধু সংগ্রহের। শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিষার কৃষিবিদ নয়ন মিয়া বলেন এবছরে শিবগঞ্জে মধূ উতপাদনের লক্ষ্যমাত্রা  ৮৫০০ কেজি। এ পর্যন্ত  উতপাদন হয়েছে ৪৯০০ কেজি।শিবগঞ্জে ৬টি দলের মাধ্যমে প্রায় ১০০ জন মধূ চাষ করছে। এছাড়াও নাটোর নেত্রকোনা,নড়াইল সাতক্ষীরা সহ বিভিন্ন জেলা থেকে অনেক দল মধু চাষ করতে আসে। মধু চাষে সরিয়ার উতপাদন কমে না ববং পরাগায়ণের ফলে ফলন বৃদ্ধি পায়। সরিয়া ক্ষেতে বিষ প্রয়োগ না করার জন্য সচেতন করা হচ্ছে। অনেকটা কমেছে। তিনি বলেন আমি মৌ বোর্ড গঠনের অনুরোধ জানিয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো । এটি একটি ভাল প্রস্তাব।


Create Account



Log In Your Account