ধর্ম ডেস্কঃ বদর দিবস মুসলিম ইতিহাসের গৌরবময় অধ্যায় ১৭ রমজান ঐতিহাসিক বদর দিবস। এই দিবস মুসলিমদের এগিয়ে চলার প্রেরণা। ৬২৪ খ্রিস্টাব্দে তথা দ্বিতীয় হিজরির ১৭ রমজানে বদর প্রান্তরে সংঘটিত হয় ঐতিহাসিক বদর যুদ্ধ। প্রতিপক্ষ ছিল মক্কার মুশরিক ও মদিনার মুসলিম। এতে মুসলমানদের সেনা সংখ্যা ছিল মাত্র ৩১৩ আর কাফেরদের সংখ্যা ১০০০ জন। এই যুদ্ধে মুসলমানরা সংখ্যায় কম হয়েও কাফিরদের বিশাল বাহিনীর ওপর বিজয় লাভ করেছে। কোরআনে এই যুদ্ধকে সত্য-মিথ্যার মধ্যে পার্থক্যকারী যুদ্ধ বলে অভিহিত করা হয়েছে। বদর যুদ্ধ থেকে শিক্ষাঃ-সাহায্য শুধুমাত্র আল্লাহর পক্ষ থেকে আসেঃ মুমিনদের বৈশিষ্ট্য হলো বিপদ কিংবা প্রতিকূল পরিস্থিতিতে মনোবল হারায় না, বিচলিত হয় না। তারা তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী প্রস্তুতি গ্রহণ করে আল্লাহর ওপর ভরসা করবে। বদর যুদ্ধে দেখা যায়, মুসলমানদের সেনা সংখ্যা অবিশ্বাসীদের তুলায় অনেক কম ছিল। মুসলমানদের সেনা সংখ্যা ছিল মাত্র ৩১৩ জন।মুসলমানদের যুদ্ধ সরঞ্জাম তলোয়ার ০৮টি,বাহন বলতে ছিল উট ৭০টি, ঘোড়া-০২টি, এবং বর্ম ৬০টি অপরদিকে কাফেরর পক্ষে ১০০০ জন, সশস্ত্র সৈন্য ৬০০, ঘোড়া ৩০০টি, উট ৭০০টি। এ যুদ্ধ ১৪জন মুসলমান শহীদ হন,অপরদিকে ৭০জন কাফের মৃত ও ৭০জন কাফের বন্দি হয়। এ যুদ্ধ প্রমাণ করে যে বিজয় কিংবা সাফল্যের ওপর সেনা সংখ্যাধিক্যের কোনো প্রভাব নেই। মুনাফিকদের ষড়যন্ত্রঃ যুগ যুগ ধরে মুনাফিকদের উপস্থিতি আছে। তারা ইসলামের লেবাস পরে ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকে। বদর যুদ্ধের দিনেও তারা মুসলমানদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল। মুমিনরা যখন সম্পূূর্ণ অপ্রস্তুত অবস্থায় কাফিরদের বিশাল বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিল, তখন মুনাফিকরা বলল, মুসলিমরা নিজেদের দ্বিনের ব্যাপারে ধোঁকার মধ্যে রয়েছে। অহংকার পতনের মূলঃ মক্কার কাফিররা নিজেকে খুব ক্ষমতাবান মনে করত। আত্ম-অহমিকা ও অহংকারের কারণে কেউ তাদের সামনে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারত না। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে তারা মক্কায় মুসলমানদের ওপর বর্ণনাতীত নির্যাতন করেছিল। যুদ্ধের দিনও মুসলমানদের তুলনায় তাদের সেনা সংখ্যা ও যুদ্ধ সুরঞ্জাম অনেক বেশি ছিল। এ নিয়ে তারা অহংকারও করেছিল। কিন্তু আল্লাহ তাদের অহংকার ও ক্ষমতার দাপট মাটিতে মিশিয়ে দিলেন। বদর যুদ্ধে আবু জাহেল, উতবা, শাইবা ও উমাইয়ার মতো কুরাইশদের বড় বড় সর্দার নিহত হয়। বদর যুদ্ধ থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা ইসলামের জন্য ঈমানের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করব।#