চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধিঃচাঁপাইনবাবগঞ্জ আমের রাজধানী হিসেবে সকলের কাছে সমাদৃত। বিভিন্ন জাতের আম এখন পরিপক্ক হয়েছে। আমের মৌসুম চলছে জেলার আম বাগানগুলোতে ব্যাপক পরিচর্যা। আম চাষী ও ব্যবসায়ীরা নিচ্ছেন আম পাড়ার ও বেচাকেনার প্রস্তুতি। ইতোমধ্যে দুইএক ধরনের গুটি জাতের আম বাজারে আসছে। তবে চাষিরা ও ব্যবসায়ীরা বলছেন চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে বাজারে আসবে পাকা আম। এবারও আম ক্যালেন্ডার নির্ধারণ করেনি প্রশাসন। তবে অপরিপক্ক আম বাজারজাত করলে কঠোরভাবে তা দমন করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রশাসন।চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার চককির্তি ইউনিয়নের আম চাষী কামরুজ্জামান ওরিপন আহম্মেদের বাগানে গিয়ে দেখা যায়, তিনি বেশ কয়েকজনকে শ্রমিক সঙ্গে নিয়ে বাগানে আমের পরিচর্যায় ব্যস্ত। রিপন আহম্মেদ বলেন- আর এক সপ্তাহে পর থেকে আম পাকতে শুরু করবে। মে মাসের শেষ সপ্তাহে গোপালভোগসহ কয়েকটি জাতের আম পাকবে। জুনের শেষ সপ্তাহে আরও কিছু জাতের আম বাজারে আসবে। যদি আবহাওয়া অনুকুলে থাকে এবং দাম ভালো পাওয়া যায় তাহলে কিছুটা লাভবান হবো। নাচোল উপজেলার আম চাষী আকমাল বলেন, এবছর বৃষ্টি কম হওয়ার কারণে সেচ খরচ বেশি হয়েছে। বৈরি আবহাওয়া কারণে বালাইনাশক প্রয়োগও করতে হয়েছে বেশি তাই এবার আমের দাম কমে গেলে বা প্রতিকূল আবহাওয়া হলে লোকসান হবে। এদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে আম পাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বাগানিরা। আমের মৌসুম ঘিরে জেলায় চলছে ব্যাপক কর্মচাঞ্চল্য। বাজার কর্তৃপক্ষও সেরে নিপ্রস্তুত আম বেচাকেনার জন্য। দেশের সবচেয়ে বড় আম বাজার কানসাটকে ঘিরে ইতোমধ্যে বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যাপারীরা ভিড় জমাতে শুরু করেছেন।আমের আড়তের ঘরগুলো ঠিক,ক্যারেট,কাটন,টুকরি আড়তে জমা করা নিয়া ব্যস্ত। এদিকে এ মৌসুমে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার আম বাণিজ্যের সম্ভবনা দেখছেন জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীরা। কৃষি সম্প্রসারণের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছরের তুলনায় ১০০ হেক্টর কমে চাঁপাইনবাবগঞ্জে এবার ৩৭ হাজার ৫০৪ হেক্টর জমিতে আম চাষাবাদ হচ্ছে। পাঁচ উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আম চাষ হয়েছে শিবগঞ্জে। এখানে ২০ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে আম গাছ রয়েছে। এছাড়া ভোলাহাট উপজেলায় ৩ হাজার ৬৩৪ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। যা উপজেলাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম জমিতে আম চাষ। চলতি বছর প্রতি হেক্টরে ১০ দশমিক ৩ মেট্রিক টন হিসেব করে আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মোঃ ইয়াছিন আলী বলেন, চলতি আমের মৌসুমে প্রায় ৪ লাখ মেট্রিক টন আম উৎপাদনের আশা করছেন বাগান মালিকরা। এসব আম প্রতিকেজি গড়ে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হবে। এমন হিসেব করে এ বছর প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার আম বাণিজ্যের আশা করা হচ্ছে।#