চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধিঃচাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রস্তুত করা হচ্ছে কানসাট আমবাজারের আড়তগুলো আমের জন্যই চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার একটি বিশেষ পরিচিতি রয়েছে। দেশের সর্ববৃহৎ আমবাজারও বসে জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাটে। তবে অন্য জেলায় আম বেচাকেনা শুরু হলেও এখনো জমে ওঠেনি ঐতিহ্যবাহী কানসাট আমবাজার।সরেজমিনে দেখা যায়, এখনো এ বাজারে আম বেচাকেনা শুরু হয়নি। তবে আড়তদাররা প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কেউবা নতুন আড়ত নির্মাণ করছেন। আবার কেউ আগের আড়ত গোছগাছে ব্যস্ত। আড়তগুলোর বেশিরভাগ নির্মাণ হচ্ছে টিনের চালা দিয়ে।উপজেলার মুসলিমপুর এলাকার হাফিজ আলী প্রায় ১০ বছর ধরে আম ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। কানসাট আমবাজারের পাশেই তিন বছর ধরে আড়ত দিয়েছেন তিনি।হাফিজ আলী বলেন, গতবছর এ টিনের চালা দিয়ে আড়ত করে প্রায় দেড় কোটি টাকার ব্যবসা করেছি। এতে আমার আয় হয়েছিল দুই লাখ টাকা। এবার ফের আড়ত ঠিক করছি। টিনের কিছু অংশ ছিদ্র হয়ে গিয়েছিল, সেটি মেরামত করলাম। গত পাঁচদিন ধরে এ কাজে ব্যস্ত রয়েছি।তিনি আরও বলেন, এখানকার আম সবচেয়ে সেরা। তাই দেশের বিভিন্ন স্থানে অন্য এলাকার আম চাঁপাইনবাবগঞ্জের বলে বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু কানসাট এলাকার আম এখনো বাজারে আসেনি। তবে শিগগির বাজারে আসবে এ এলাকার সুস্বাদু পরিপক্ব আম।কানসাট বাজারের পাশেই লিচু বাগান এলাকায় শ্রমিক দিয়ে আড়ত মেরামত করছিলেন মুক্তা মিয়া। তিনি বলেন, আমার আড়তের কাজ প্রায় শেষ। টাকা-পয়সার প্রস্তুতি নিয়েছি। এখন শুধু বাজারে আম আসার অপেক্ষা। কিন্তু এখনো বাজারে আম আসা শুরু হয়নি। কারও আম এখনো পরিপক্ব হয়নি। তবে ১০/১২ দিনের মধ্যে কানসাট আমবাজার জমজমাট হয়ে উঠবে।মুক্তা মিয়া আরও বলেন, প্রথমে এ বাজারে পাওয়া যাবে গোপালভোগ, গুঁটি,লক্ষণভোগ ও খিরসাপাত বা হিমসাগর জাতের আম।কানসাট বাজারের মিলিক মোড়ে কয়েকটি দোকানে দেখা গেলো, গত বছরের আম পরিবহনের বেশকিছু ভাঙ্গা ক্যারেট মেরামত করছেন কয়েকজন শ্রমিক। মিঠন নামে তাদের একজন জানালেন, বেশ কয়েকবার আম নিয়ে ট্রাকে যাতায়াত করায় যে ক্যারেটগুলো ভেঙ্গে যায় সেগুলো তারা কিনে নেন। পরে মেরামত করে আবার বিক্রি করেন।কানসাট আম আড়তদার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক টিপু বলেন, আমাদের বাজারে এখনো সেভাবে আম বেচাকেনা শুরু হয়নি। তব ব্যবসায়ীরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন। খুব শিগগির আম বেচাকেনা শুরু হবে। আজ সোমবার তিন থেকে চার ভ্যান গোপালভোগ ও গুটি জাতের আম বেচাকেনা হয়েছে। আশা করছি, ১০ দিনের মধ্যে এ বাজার জমে উঠবে।শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুল হায়াত বলেন, কানসাট আম বাজারের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে মতবিনিময় হয়েছে। এসময় বেশকিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে; যেমন- যানজট কঠোরভাবে নিরসন করা হবে, সিএনজি এবং অটোস্ট্যান্টের জায়গা নির্ধারণ করে দেওয়া হবে, খালি ক্যারেট নিয়ে হাট অতিক্রম করতে কোনো খাজনা দিতে হবে না, আম লোড করা গাড়িতে মাদক বহন করলে আইনের আওতায় আনা হবে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা হবে।তিনি আরও বলেন, কানসাট আমবাজার এশিয়া মহাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাজার। জেলায় ৩৭ হাজার ৮৫৫ হেক্টর জমিতে আম বাগান রয়েছে। এবছর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন।#