By: Admin
Mar 4, 2023

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধিঃচাঁপাইনবাবগঞ্জ,রাজশাহী বরেন্দ্র অঞ্চলের উঁচু জমিতে তুলার চাষ বাড়ছে। সেচ কম লাগে বলে এই ফসল চাষ করে লাভ বেশি হয়।বরেন্দ্র অঞ্চলের তুলাগাছে ফুটে আছে সাদা ফুল। ছড়াচ্ছে মনজুড়ানো শুভ্রতা। তুলার খেত শুধু আনন্দই দিচ্ছে না, কৃষকের মুখে তৃপ্তির হাসিও ফুটিয়েছে। ভালো ফলন ও ভালো দাম পেয়ে কৃষকেরা খুশি। এ কারণে বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষকেরা তুলা চাষের দিকে ঝুঁকছেন। গত বছরের তুলনায় এবার দ্বিগুণ জমিতে বেড়েছে চাষ। বেড়েছে চাষির সংখ্যা।তুলা চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ায় বরেন্দ্র অঞ্চলে তুলা চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের তুলা উন্নয়ন গবেষণা কেন্দ্র। এ বিষয়ে গবেষণা কেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোঃ জাহাঙ্গীর আলম  জানান, বরেন্দ্র ভূমির উঁচু জমি, যেগুলোতে সেচসুবিধা নেই বা কম ফসল হয়, সেসব জমিই তুলা চাষের উপযোগী। খরাপ্রবণ বরেন্দ্রভূমিতে সেচ ছাড়া বা কম সেচের ফসল চাষের উপযোগী। অন্যদিকে কোনো দুর্যোগের কবলে পড়ে না বললেই চলে। প্রচলিত অন্যান্য ফসলের তুলনায় লাভজনক। তুলা বিক্রির জন্যও ক্রেতা খুঁজতে হয় না, বরং ক্রেতাই আসে চাষিদের দোরগোড়ায়। ফলে তুলা চাষের দিকে ঝুঁকছেন কৃষক। জনপ্রিয় হয়ে উঠছে তুলা চাষ। গত মৌসুমে যেখানে বরেন্দ্র অঞ্চলের ৫০০ বিঘা জমিতে তুলা চাষ হয়েছে, সেখানে এবার হয়েছে এক হাজার বিঘায়। তুলা চাষে উদ্বুদ্ধ করার জন্য বাড়ানো হয়েছে প্রদর্শনী প্লটও।চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার পূর্বলক্ষণপুর গ্রামের সাঁওতাল যুবক যুসেন টুডু তুলা চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। তুলা চাষে এবার তাঁর চতুর্থ বছর। গত বছর তিনি পাঁচ বিঘায় তুলা আবাদ করেছেন। এবার করেছেন ১২ বিঘায়।

যুসেন টুডু বলেন, ‘তুলা চাষই আমাকে পায়ের তলায় মাটি দিয়েছে। তুলা চাষ করে বিঘায় ২০-২৫ হাজার টাকা লাভ হয়েছে। তুলা চাষে প্রতি বিঘায়  ১৫-১৬ হাজার টাকা খরচ হয়। তুলা চাষের লাভ দিয়ে সেচপাম্প কেনা হয়েছে। নিজের জমি ছাড়াও অন্যের জমিতে পানি দিয়ে বাড়তি আয় করছি।’ তিনি আরও বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার নাচোলে তুলার চাষ হয়েছে দ্বিগুণের বেশি। চাষির সংখ্যাও বেড়েছে। আগামী বছর আরও বাড়বে আশা করা যায়।

বরেন্দ্র অঞ্চলের গোমস্তাপুর উপজেলার পার্বতীপুর ইউপি বড়দাদপুর গ্রামে আর এক শিক্ষিত তুলাচাষি মোতাহার হোসেন (৩৮)। বিদ্যুৎ প্রকৌশলবিদ্যায় স্নাতক তিনি। চাকরি করতেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। প্রশিক্ষণ নিয়ে গত মৌসুমে তিনি ১৭ বিঘায় তুলা চাষ করেন। আশপাশের অন্যরা যেখানে বিঘাপ্রতি ১০ মণ তুলা উৎপাদন করে খুশি; সেখানে তাঁর জমিতে ১২ মণ করে ফলন হয়। চলতি মৌসুমে তিনি ১৯ বিঘায় তুলা চাষ করেছেন।

মোতাহার হোসেন বলেন, তুলা চাষে অনেক সুবিধা। তুলা বিক্রি করতে ক্রেতা খুঁজতে হয় না বরং ক্রেতাই এসে কিনে নিয়ে যান। পেমেন্টও ভালো। গত মৌসুমের আগের মৌসুমে দাম ছিল প্রতি মণ ছিল ২ হাজার ৭০০ টাকা। গত মৌসুমে ছিল ৩ হাজার ৬০০ টাকা আর এবার ৩ হাজার ৮০০ টাকা। এ দাম পেয়ে তুলাচাষিরা খুশি।

রাজশাহী অঞ্চলের তুলা উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান তুলা উন্নয়ন কর্মকর্তা মোজাদ্দীদ আল শামীম জানান, বরেন্দ্র অঞ্চলে তুলা চাষের উপযোগী জমি রয়েছে প্রায় দুই লাখ হেক্টর। এর মধ্যে ৫০ হাজার হেক্টর জমি তুলা চাষের আওতায় আনার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে তুলা উন্নয়ন বোর্ডের।#

 

 

 


Create Account



Log In Your Account