By: Admin
Apr 3, 2023

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধিঃ চাঁপাইনবাবগঞ্জে জেলা শহরের কোমলমতি শিশুরা স্কুলের ভারী ভ্যাগ টানতে টানতে ক্লান্ত হয়ে পড়ছে। তারা খেলাধুলা কিংবা বিনোদনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত থেকে যাচ্ছে। পাড়া-মহল্লায় খেলার মাঠ না থাকায় তারা ইচ্ছে থাকলেও খেলবার সুযোগ পাচ্ছে না। অন্যদিকে শিশুদের জন্য শহরের কোলাহল চিরে নির্মল বিনোদনের জন্য কোনো পার্ক না থাকায় তাদের মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বিশেষ করে একটি মানসম্মত শিশুপার্কের চাহিদা থাকলেও তা না থাকায় সে সুযোগ থেকেও তারা বঞ্চিত হয়ে আসছে। তবে আশার কথা শিশুপার্ক না থাকার এই খরা কাটিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসনের ‘কালেক্টরেট শিশুপার্ক’টি চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করায় সেই খরা কাটিয়ে উঠবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।জানা যায়, কালেক্টরেট ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল ও গ্রিনভিউ স্কুল সংলগ্ন জেলা প্রশাসনের কর্তৃত্বাধীন ক্যালেক্টরেট শিশুপার্কটি দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল। অবশেষে সেই শিশুপার্কটি পূর্ণাঙ্গ শিশুপার্ক হিসেবে চালু হতে যাচ্ছে। আর এ শিশুপার্কটি উদ্বোধন হয়ে গেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিশুরাসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষজন এখানে ছুটির দিনসহ অবসর সময়ে ঘুরতে পারবেন।সম্প্রতি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খাঁনের নির্দেশে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা এ পার্কটির নতুন আঙ্গিকে সংস্কার করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। পার্কের মধ্যবর্তী স্থানে একটি সুন্দর বড় ঝরনা, একদিকের প্রবেশ মুখে স্টাচু অব লির্বার্টি, গরিলা, ড্রাগন, ডায়নোসর, বড় হাতি, ছোট হাতি, আমের প্রতিকৃতি এবং অন্যদিকের প্রবেশ মুখে বিভিন্ন ধরনের পাখি, এছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় বাঘ, জিরাপ, ঘোড়া, হরিণ, পক্সিক্ষরাজ, ক্যাঙ্গারু, মটু-পাতলু, মিকি, খরগোস, ময়ূর, হাঁস, দোয়েল, কবুতরসহ আরো অংসখ্য প্রাণির প্রতিকৃতি স্থাপন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে রয়েছে বিভিন্ন রাইড। পার্ক ঘুরে ক্লান্ত মনকে জুড়িয়ে নিতে বসবার আসনগুলোও করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দনভাবে।এই পার্কটি চালুর পর শিশুরা এখানে এসে সেইসব প্রাণিদের সম্পর্কে জানতে পারবে, তাদের মানসিক বিকাশও ঘটবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পার্কের যে কোনো একদিকে একটি ক্যান্টিন ও দোকান করা হবে। যাতে বিনোদনপ্রেমীরা পার্কে ঘুরতে এসে হালকা খাবারও খেতে পারে। শিগগিরই এটি উদ্বোধন করা হবে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের প্রাণকেন্দ্রে স্কুল, কলেজ, মার্কেট, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, কোর্টচত্বর, স্টেডিয়াম থাকলেও এখানে শিশুদের মানসিক বিকাশে তেমন কোনো পার্ক না থাকায় একদম শহর থেকে বাইরে বিভিন্ন স্থানে মানুষজন শিশু ও পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুরতে যায়। শিশুদের বড় হওয়ার পাশাপাশি তাদের মানসিক পরিপক্বতার জন্য দরকার বাইরের পৃথিবীর আলো-বাতাস, এক টুকরো খোলা মাঠ। শিশু যদি আনন্দ নিয়ে কোনো কিছু শিখতে পারে তাহলে তা আর সারাজীবনেও ভোলে না। এসব বিষয় মাথায় রেখে জেলা প্রশাসন পার্কটি নবরূপে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে।সম্প্রতি জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খাঁন পার্কটির চলমান কাজ পরিদর্শন করেছেন। এসময় তার সাথে উপস্থিত ছিলেনÑ স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক ও সরকারের উপসচিব দেবেন্দ্র নাথ উরাঁও, অতিরিক্তি জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আহমেদ মাহবুব-উল-ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আসিফ আহমেদ, এনডিসি তৌফিক আজিজ, সহকারী কমিশনার মিঠুন মৈত্র, আমিনুল ইসলাম।ক্যালেক্টরেট শিশু পার্কের বিষয়ে জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খাঁন বলেন, জেলা প্রশাসনের ১ একর ৭০ শতক জায়গা নিয়ে এ পার্ক। দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকায় সেখানে কেউ যাতাযাত করত না। এছাড়াও এ অঞ্চলের শিশুদের জন্য ভালো কোনো পার্ক না থাকায় আমরা এ ক্যালেক্টরেট পার্কটি শিশুদের উপযোগী করার সিদ্ধান্ত নিই। আমরা সুস্থ মানুষের জন্য ওয়ার্কওয়ে, শিশুদের জন্য বিভিন্ন ধরনের রাইড, খেলনা দিয়ে সাজানোর চেষ্টা করছি। আশপাশের বিভিন্ন স্কুলের শিশু শিক্ষার্থীরা এখানে ঘুরতে আসবে। আমরা চাই, পার্কটি জেলার মানুষের বিকেলবেলার সুস্থ বিনোদন পার্ক হোক।পার্কের সার্বিক দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আহমেদ মাহবুব-উল-ইসলাম জানান, জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খাঁন স্যারের পরিকল্পনায় জেলাপর্যায়ে শিশুদের সুস্থ বিনোদনের জন্য বিভিন্ন প্রাণীর ম্যুরাল ও খেলাধুলার রাইড স্থাপন, বিভিন্ন ডিজাইনের বসার জায়গা নির্মাণ, পার্কিং টাইলস দিয়ে ওয়াকওয়ে নির্মাণ করছি। এসব কাজের মাধ্যমে কালেক্টরেট শিশুপার্কটির সংস্কার ও আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই শিশুপার্কটি পরিবর্ধিত ও পুনর্বিন্যাসকৃত অবস্থায় চালু হতে যাচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, শিশুপার্কটি এই এলাকার শিশুসহ বিভিন্ন বয়সী জনসাধারণের কাছে অবসর সময়ের অন্যতম আকর্ষণীয় নির্মল বিনোদন কেন্দ্রে পরিণত হবে এবং শিশুদের মানসিক বিকাশে পার্কটির অন্যতম ভূমিকা থাকবে।#


Create Account



Log In Your Account